বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপের পর মূল্যস্ফীতি আরও কমে এপ্রিলে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমেছে। গত বছরের একই সময়ে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ ছিল। তবে সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিলে খাদ্যপণ্যের দামে স্বস্তি এলেও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দামে অস্বস্তি রয়ে গেছে। সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
‘করবৈষম্য’ কমিয়ে আনতে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শহরের মতো গ্রামের করদাতাদেরও ব্যক্তিশ্রেণির ন্যূনতম আয়কর ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে-সাধারণ মানুষের করভার লাঘবে করমুক্ত আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত এপ্রিল মাসে দেশে এসেছে ২৭৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। রোববার (৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য দিনদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখার জন্য তাই মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে পাল্লা দিয়ে। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীরা নিয়মিত পাঠাচ্ছেন বৈদেশিক মুদ্রা। সবশেষ সপ্তাহজুড়ে যেমন কিছু মুদ্রা স্থিতিশীল ছিল, আবার দামে উত্তরণ-অবনমনও হয়েছে অনেক মুদ্রায়। মার্কিন ডলার স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে অন্যান্য দেশের ডলারের দাম। স্থিতিশীল রয়েছে ভারতীয় রুপি, মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত ও সৌদি রিয়াল।
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আগামী সাত মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ছয় গুণ বাড়ানোর একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর ‘থ্রি জিরো’ বা তিন শূন্য তত্ত্ব বৃহৎ পরিসরে আজ পৃথিবীতে বহুল আলোচিত। ড. ইউনূসের অভিব্যক্তি ‘শূন্য তত্ত্ব এক নতুন সভ্যতার জন্ম দেবে’। এতে গড়ে উঠবে সবার জন্য বাসযোগ্য এক নতুন পৃথিবী।
দেশের তৈরি পোশাক খাতের ৩৮৫টি কারখানার ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন ন্যূনতম মজুরি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করেছে ৬৮ শতাংশ কারখানা। বাকি ৩২ শতাংশ বিভিন্ন কারণে সরকারের সর্বশেষ ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এসব কারখানার মধ্যে ২২ শতাংশ আগের চেয়ে মজুরি বাড়িয়েছে।
গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) পুরো সময়জুড়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ হয়েছিল ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই প্রায় সেই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
এক বছর আট মাস পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবারও ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ২০২৩ সালের আগস্টে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি গেলেও তা অতিক্রম করেনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আট মাসের মাথায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির বকেয়া বিল পরিশোধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে এই বকেয়া বিল কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ মিলিয়ন ডলারে, যেখানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এটি ছিল ৬৬৫ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার।
অতীতে বাজেট ঘোষণা করা হলেও বছর শেষে বাস্তবায়ন হয়নি আমি জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা এবার এ ধারা থেকে বের হয়ে আসতে চাই। আমরা এমন বাজেট দিবো যা হবে বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য। এটিই হবে এবারের বাজেটের মূলনীতি। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এনবিআর ও এফ বি সি এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাজেট পরামর্শ কমিটির বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী বাজেটে সাধারণ করদাতাদের জন্য বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে চার লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। প্রসঙ্গত, এখন সাধারণ করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার।
কোরবানির ঈদের আগেই নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকার নতুন নোটে থাকবে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতির পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নির্দশন। অন্যদিকে চাহিদা থাকলেও বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট গ্রাহকদের দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো।
রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার ইসলামি বন্ড (সুকুক) ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ৭ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ডের বিপরীতে বছরে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে ভাড়া পাবেন বিনিয়োগকারীরা।
২০২৭ সালের জুন মাসের মধ্যে শুল্ক-কর সংক্রান্ত সব ধরনের কর অব্যাহতি যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এই লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। কর অব্যাহতি তুলে দেওয়ার ‘উচ্চ’ অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছে।