ডেস্ক নিউজ: 

রাশিয়ার ঘোষিত তিন দিনের এক যুদ্ধরিবতি বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে। কয়েক রাত ধরে রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ব্যাপক হামলার পর এ দিন ইউক্রেইনের প্রধান শহরগুলোর আকাশ শান্ত ছিল।

মস্কোর স্থানীয় সময় রাত ১২টার পর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির এ সময়টি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার নাৎসি জার্মানিকে পরাজিত করার ৮০তম বর্ষপূর্তির সঙ্গে মিল রেখে নির্ধারণ করেছে ক্রেমলিন।

বিজয়ের বর্ষপূতির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও অন্যান্য দেশের নেতারা মস্কো গিয়েছেন। ৯ মে মস্কোর রেড স্কয়ারে সামরিক প্যারেডে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন তারা।

রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি মেনে চলার কোনো প্রতিশ্রুতি ইউক্রেইন দেয়নি। পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে চান, এমন ধারণা তৈরি করতে এই ‘ছল’ করছেন বলে মন্তব্য করেছে ক্রেমলিন। পুতিন বলেছেন, তিনি শান্তি অর্জন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইউক্রেইন চলতি সপ্তাহে মস্কোতে একের পর এক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এর জেরে রাশিয়া তাদের রাজধানীর বিমানবন্দরগুলো বন্ধ রেখে উড়োজাহাজগুলো নামিয়ে রাখতে বাধ্য হয়।

ইউক্রেইনের বিমান বাহিনী বলেছে, ক্রেমলিন ঘোষিত যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার যুদ্ধ বিমানগুলো সুমাই অঞ্চলে দুইবার নিয়ন্ত্রিত বোমা নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু তারা ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের কোনো উল্লেখ করেনি আর রয়টার্স তাদের এ অভিযোগের সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি।

তবে এই একটি অভিযোগ ছাড়া বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া ইউক্রেইনের কোনো শহর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন ছুড়েছে, এমন কোনো খবর হয়নি।

রয়টার্স জানায়, স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ পুরোপুরি শান্ত ছিল। অথচ এর ২৪ ঘণ্টা আগে রাশিয়ার আকাশ হামলার এবং ইউক্রেইনের বিমান বিধ্বংসী গোলার শব্দে নগরীটি প্রকম্পিত হচ্ছিল।

যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার ও ইউক্রেইনের বাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে কোনো বিরতি দেওয়া হয়েছে কি না, তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধক্ষেত্রের কাছে থাকা রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী বৃহস্পতিবার ভোররাতে জানিয়েছেন, লড়াইয়ের কোনো আওয়াজ শুনেননি তিনি।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব কিইভ দিয়েছে তা পালন করার জন্য প্রস্তুত থাকবে তার দেশ।

রাত্রিকালীন এক ভিডিও বক্তৃতায় জেলেনস্কি বলেছেন, “আমরা এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করছি না, এটি কূটনীতিকে একটি সুযোগ দিতে পারে।”

নতুন করে হামলা চালানো ছাড়া রাশিয়া এই ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।