ডেস্ক নিউজ:
সূর্য প্রতি ১১ বছর পর পর একবার সোলার ম্যাক্সিমাম পর্যায়ে যায়, যখন এর চুম্বকীয় শক্তি সবচেয়ে বেশি থাকে। সানস্পটের সংখ্যা বেড়ে যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন সূর্য এই পর্যায়েই আছে, তাই নতুন এই টেলিস্কোপ দিয়ে সূর্যকে আরো ভালোভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আমরা প্রতিদিন সূর্যের আলোয় জেগে উঠি, কিন্তু সূর্যের ভেতরে ঠিক কী ঘটে— তা জানার সুযোগ খুবই সীমিত। এবার জানার সেই সীমিত পরিসরটা একটু বড় হলো। বিজ্ঞানীরা সূর্যের সবচেয়ে স্পষ্ট ও বিশদ ছবি তুলেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সৌর টেলিস্কোপ ‘ড্যানিয়েল কে. ইনোয়ে সোলার টেলিস্কোপ’-এর মাধ্যমে ধারণ করা ছবিটি সূর্যের গায়ে থাকা সানস্পট, সোলার ফ্লেয়ার এবং অন্য রহস্য তুলে এনেছে। ছবিটি ইনৌয়ে সোলার টেলিস্কোপের নতুন ভিজিবল টিউনেবল ফিল্টার দিয়ে তোলা। আর এটি সম্ভব হয়েছে, কারণ যন্ত্রটি সূর্যের পৃষ্ঠের ত্রিমাত্রিক দৃশ্য কাছ থেকে ধারণ করতে পারে, যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি।
ছবিতে সূর্যের মাঝখানে কয়েকটি বড় বড় কালো দাগ দেখা যাচ্ছে। এগুলোকে বলা হয় সানস্পট। এগুলো আসলে সূর্যের খুব শক্তিশালী চুম্বকক্ষেত্রের এলাকা, যেখানে তাপ আটকে যায় বলে সেখানে আলো কম দেখা যায়। এজন্যই এগুলো কালো দেখায়। এখান থেকেই সূর্য ঝড় বা আগুনের বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে—যা ‘করোনাল ম্যাস ইজেকশন’ নামে পরিচিত।
সূর্য মাঝে মাঝে প্রচণ্ড শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটায়, যাকে সোলার ফ্লেয়ার বা করোনাল ম্যাস ইজেকশন বলে। এই বিস্ফোরণে সূর্য থেকে বিশাল পরিমাণ তাপ ও চার্জিত কণা ছুটে আসে। যদি এই কণাগুলো পৃথিবীর দিকে আসে, তাহলে স্যাটেলাইট, মোবাইল নেটওয়ার্ক, বিদ্যুৎ গ্রিড এমনকি ইন্টারনেটেও সমস্যা তৈরি করতে পারে। ১৮৫৯ সালে এমনই একটি শক্তিশালী সৌরঝড় (কারিংটন ইভেন্ট) পৃথিবীতে আঘাত হানে, যার ফলে টেলিগ্রাফ লাইনে আগুন ধরে গিয়েছিল! বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন, এমন ঘটনা আবার ঘটলে আগে থেকে সতর্ক করতে।
সূর্য প্রতি ১১ বছর পর পর একবার সোলার ম্যাক্সিমাম পর্যায়ে যায়, যখন এর চুম্বকীয় শক্তি সবচেয়ে বেশি থাকে। সানস্পটের সংখ্যা বেড়ে যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন সূর্য এ পর্যায়েই আছে, তাই নতুন এই টেলিস্কোপ দিয়ে সূর্যকে আরো ভালোভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এই চিত্র তোলার প্রযুক্তিটিও দারুণ অভিনব। সাধারণ ক্যামেরায় যেমন সব আলোর রঙ একসঙ্গে দেখা যায়, সেখানে এই যন্ত্র শুধু একটি করে নির্দিষ্ট রঙ বা তরঙ্গদৈর্ঘ্য দিয়ে কাজ করে। এটি অনেকটা রেডিও টিউনের মতো—যেখানে আপনি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি ধরেন। একইভাবে, ভিজিবল টিউনেবল ফিল্টার সূর্যের আলোর নির্দিষ্ট তরঙ্গ ধরে ধরে বিশ্লেষণ করে এবং হাজারো ছবি একসঙ্গে মিলিয়ে একটি স্পষ্ট ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করে। এটি অনেকটা প্রিজমের মতো কাজ করে—সাদা আলোকে যেমন রংধনুর রঙে ভাগ করা যায়, তেমনি এই ক্যামেরা সূর্যের আলোকে ভেঙে তার গভীর রহস্য বের করে আনে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্য আমাদের জীবনীশক্তির উৎস। কিন্তু এর সৌরঝড় পৃথিবীর জন্য হুমকিও হতে পারে। এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে সূর্যের আচরণ বুঝলে ভবিষ্যতে সৌরঝড় থেকে আমাদের প্রযুক্তিকে রক্ষা সহজ হবে।
ইনোয়ে সোলার টেলিস্কোপের বিজ্ঞানী ফ্রিডরিখ ওয়েগার বলেন, ‘১৮০০ সালের একটি সৌরঝড় (কারিংটন ইভেন্ট) এতটাই শক্তিশালী ছিল যে এটি টেলিগ্রাফ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। আমাদের এই ঘটনাগুলোর ভৌত কারণ বুঝতে হবে। কীভাবে এটি আমাদের প্রযুক্তি ও জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে তা জানতে হবে।’
ফজর | ০৪:৫৪-০৬:০৮ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১২:০৯-০৪:২৫ মিনিট দুপুর |
আছর | ০৪:২৬-০৬:০৬ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ০৬:১০-০৭:২১ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:২২-০৮:৪৯ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১.৩০ মিনিট দুপুর |