ঢাকা: বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতির গত ৫৩ বছরের দুর্বলতা, দুর্নীতি এবং বৈশ্বিক কাঠামোর অন্তরালের গোপন খতিয়ান উন্মোচন করে প্রকাশিত হয়েছে সাংবাদিক রাশেদ কাঞ্চনের নতুন গ্রন্থ “5C – দুর্নীতি, ষড়যন্ত্র, পুঁজিবাদ, বৈপরীত্য এবং সহযোগিতা”।

প্যান আমেরিকান পাবলিশার্স ইনকর্পোরেটেড, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত এই বইটি একযোগে নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, প্যারিস, টোকিও, সিঙ্গাপুর, দুবাই এবং ঢাকাসহ বিশ্বের একাধিক শহরে প্রকাশ পেয়েছে।

এই গ্রন্থটি লেখকের ২৫ বছরের নিবিড় গবেষণা, সাংবাদিকতা এবং বাজেট পর্যালোচনার ফল। রাশেদ কাঞ্চন, যিনি এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আই-এর প্রখ্যাত সংবাদ উপস্থাপক ও প্রতিবেদক ছিলেন, এই বইয়ে তুলে ধরেছেন—স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের করদাতাদের অর্থ, বিদেশি ঋণ ও সাহায্যের কিভাবে অপব্যবহার হয়েছে।

“5C” বইটি মূলত বাজেট ব্যবস্থাপনায় পাঁচটি কাঠামোগত সংকটকে কেন্দ্র করে নির্মিত: দুর্নীতি (Corruption), ষড়যন্ত্র (Conspiracy), পুঁজিবাদ (Capitalism), বৈপরীত্য (Contradiction), সহযোগিতা (Cooperation).

রাশেদ কাঞ্চনের ভাষায়, “এই পাঁচটি 'C'–ই গত পাঁচ দশক ধরে বাজেট ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সংকটে ঠেলে দিয়েছে।”

“5C” কেবল জাতীয় বাজেট বিশ্লেষণেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নির্ভরশীল কাঠামোর গভীর বিশ্লেষণও প্রদান করে।

গ্রন্থটি সহ-সম্পাদনা করেছেন ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেরি উইলিয়াম, যার মাধ্যমে বইটিতে আন্তর্জাতিক একাডেমিক মানদণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ ঘটেছে।

গ্রন্থটির বৈশ্বিক বিতরণ করছে প্যানোরামা পাবলিশিং কোম্পানি, প্যারিস, যা আন্তর্জাতিক পাঠাগার, বিশ্ববিদ্যালয় ও নামকরা বইয়ের দোকানে বইটি সরবরাহ করছে।

রাশেদ কাঞ্চন শুধু একজন প্রথিতযশা সাংবাদিকই নন, তিনি ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধ এবং ২০০১ সালে সিয়েরা লিওনের গৃহযুদ্ধ থেকে সরাসরি প্রতিবেদন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত Rashed Kanchan Corporation (RKC)-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী।

“5C” গ্রন্থে রাশেদ কাঞ্চন দৃঢ়ভাবে দেখিয়েছেন—কিভাবে দুর্নীতি ও বৈদেশিক নির্ভরতা জাতীয় উন্নয়নের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বইটি পাঠকদের উন্নয়নের প্রচলিত ব্যাখ্যা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।

"5C" নিছক একটি বই নয়—এটি একটি আহ্বান। গবেষণালব্ধ তথ্য, বিশ্লেষণ এবং সাহসিকতায় নির্মিত এই গ্রন্থটি বাজেট ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে। বইটি সাংবাদিকতা, অর্থনীতি এবং নীতিনির্ধারণের প্রতিটি অঙ্গনে নতুন আলো ফেলেছে।