| ২২ জুন ২০২৫


সংকটে ইসরাইল, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

রিপোর্টারের নামঃ ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট টাইম : 20-06-2025 ইং
  • 1734 বার পঠিত
সংকটে ইসরাইল, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
ছবির ক্যাপশন: সংকটে ইসরাইল, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইরানে মার্কিন হামলার সিদ্ধান্ত স্থগিত করায় একটি কৌশলগত সংকটে পড়েছে ইসরাইল।

ইসরাইলের এখন প্রধান লক্ষ্য হলো ইরানের উত্তরের ফোরদো পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাটি ধ্বংস করা—যেটি এত গভীর ভূগর্ভে অবস্থিত যে, ইসরাইলের প্রচলিত বোমাগুলো দিয়ে তা ধ্বংস করা যাবে না।

কয়েকদিন ধরে ইসরাইলি কর্মকর্তারা আশা করছিলেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান পাঠাবেন—যেগুলোর কাছে এমন অস্ত্র রয়েছে যা ফোরদোর মতো লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সক্ষম।

কিন্তু এখন ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এমন কোনো হস্তক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরও দুই সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন—যা ইসরাইলের সামনে একটি কঠিন দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্পের জন্য যত বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়, ততই ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়ছে। ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে গিয়ে ইসরাইল দ্রুত তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী অস্ত্রের মজুদ শেষ করে ফেলছে, ফলে দেশটির কিছু এলাকাকে অন্যদের তুলনায় অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেসামরিক এলাকা ও কৌশলগত নিরাপত্তা স্থাপনাগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার ঝুঁকি বাড়ছে।

ইসরাইলের আকাশসীমা বর্তমানে বন্ধ এবং দেশের অধিকাংশ অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে, ফলে যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে, অর্থনৈতিক ক্ষতিও তত বাড়বে। যুদ্ধ যত দ্রুত শেষ হবে, বাণিজ্যিক ফ্লাইট এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম তত তাড়াতাড়ি পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে।

মার্কিন সহায়তার জন্য আর অপেক্ষা না করে ইসরাইল চাইলে ফোরদোতে এককভাবে হামলা চালাতে পারে—তাদের নিজস্ব যুদ্ধবিমান ও অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। কিছু বিশ্লেষকের মতে, ইসরাইলের কমান্ডো পাঠিয়ে ফোরদো স্থাপনাটি ধ্বংস বা অকার্যকর করার চেষ্টা করতে পারে। বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “আমরা আমাদের সব লক্ষ্য অর্জন করব, তাদের সব পারমাণবিক স্থাপনাগুলো। আমাদের সে ক্ষমতা রয়েছে।”

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পথটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর কার্যকারিতা সীমিত হতে পারে। সাবেক ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ইতামার রবিনোভিচ বলেন, “এটা সম্ভবত এমন মাত্রার হবে না, যেমনটা যুক্তরাষ্ট্র করতে পারে। আমরা যদি তা পারতাম, তাহলে ইতোমধ্যেই করে ফেলতাম।”

আরেকটি বিকল্প হলো—ইসরাইলের একতরফাভাবে যুদ্ধ থামিয়ে দেয়, কিন্তু ফোরদোতে হামলা না করে। তবে এতে ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অক্ষত থেকে যাবে, যার ফলে ভবিষ্যতে ইরান একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে—যেটা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে।

তবে আপাতত, ইসরাইল এ পথ গ্রহণ করবে বলে মনে হচ্ছে না। ইসরাইলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখন প্রকাশ্যে ইরানি শাসনব্যবস্থা পতনের আহ্বান জানাচ্ছে এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার কথাও বলছে। যদিও খামেনির সরকার পতনের কোনো বাস্তব কৌশল ইসরাইলের হাতে নেই, কিন্তু এমন মন্তব্যের ধরণ থেকে বোঝা যাচ্ছে, অন্তত কিছুদিন ইসরাইল তাদের হামলা অব্যাহত রাখার ইচ্ছা পোষণ করছে।

শুক্রবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলোতেও এ ধরনের যুদ্ধ-সমর্থনমূলক সুর লক্ষ করা গেছে, যার সঙ্গে সাম্প্রতিক জনমত জরিপও সাযুজ্যপূর্ণ। ইরানে ইসরাইলের হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দল ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী জনসমর্থন পেয়েছে—যখন হামাস ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Gen Z Bangladesh Online - জেন জি বাংলাদেশ অনলাইন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ