| ২২ জুন ২০২৫


রোডম্যাপ প্রণয়নে ব্যস্ত ইসি, বিশ্লেষকদের শঙ্কা নিরাপত্তা নিয়ে

রিপোর্টারের নামঃ ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট টাইম : 18-06-2025 ইং
  • 2882 বার পঠিত
রোডম্যাপ প্রণয়নে ব্যস্ত ইসি, বিশ্লেষকদের শঙ্কা নিরাপত্তা নিয়ে
ছবির ক্যাপশন: রোডম্যাপ প্রণয়নে ব্যস্ত ইসি, বিশ্লেষকদের শঙ্কা নিরাপত্তা নিয়ে

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের রোডম্যাপে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট এবং নভেম্বর তফসিলের সময়সীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে। ভোটার তালিকা এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে চায় ইসি। তবে বিশ্লেষকদের শঙ্কা, সমন্বিত নির্বাচনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি না করলে ব্যর্থ হতে পারে আগামী নির্বাচন।

লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর থেকে বদলাতে শুরু করেছে বাংলাদেশের নির্বাচনী হাওয়া। প্রথমে জুন, তারপর এপ্রিল। কিন্তু ডরচেষ্টারের বৈঠক আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ফেব্রুয়ারিতে নিয়ে এসে ঠেকিয়েছে। সেই অনুযায়ী, প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসি সূত্র বলছে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণ এবং নভেম্বরে তফসিল ঘোষণার প্রাথমিক সময়সীমা ধরে নিয়ে রোডম্যাপ প্রণয়নের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন) কমিশন সভায় বসছে ইসি। সে সভায় নির্বাচনের চলমান কাজগুলো পর্যালোচনার পর ঠিক করা হবে পরবর্তী কার্যক্রম। কমিশন সূত্র বলছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সীমানা পুনঃনির্ধারণের খসড়া প্রকাশ আর সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। একই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে নির্বাচন সামগ্রী কেনাকাটার কাজ। চলতি মাসের ২২ তারিখের মধ্যে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হবে।

নির্বাচন বিশ্লেষক জেসমিন টুলি বলেন, ‘আইনের যেসব জায়গায় সংশোধন আসবে তারপর তাদের যেসব ম্যানুয়াল, তাদের প্রশিক্ষণ, মানুষদের তৈরি করা বা যে পরিবর্তন হবে- পরিবর্তিত অবস্থাগুলো সব জায়গামতো ঠিক করার জায়গাগুলোতে তাদের মনোযোগ দিতে হবে নতুনভাবে। এছাড়া গতানুগতিক যে কাজগুলো আছে সেগুলো অনেকদিন আগে থেকেই তারা তৈরি হচ্ছে। আমার ধারণা এটার কোনো জটিলতা নেই।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হলেও অতীতের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে কঠিন হবে আসন্ন সংসদ নির্বাচন। বিশেষ করে দাপ্তরিক প্রস্তুতি ছাপিয়ে কমিশনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে মাঠপ্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ। সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে সবচেয়ে বেশি নজর দেয়ার তাগিদ তাদের।

জেসমিন টুলি বলেন, ‘যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার আছে এবার কিন্তু মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং নেই, নির্বাচন ভালো হবে। আসলে কিন্তু তা না- এবার কিন্তু অনেক চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘদিন দেশে নির্বাচনের যে একটা পরিবেশ প্রয়োজন হয় সেটা কিন্তু নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনী একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং সমতল ক্ষেত্র করতে হবে সবার জন্য। সেখানে নির্বাচন কমিশনকে কাজ করতে হবে।’

নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমরা তো গত ১৫ বা ১৬ বছরে যেটা দেখেছি, মাঠ প্রশাসন তাদের মতো করে নির্বাচন পরিচালনা করেছে। এবং নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কোনো ভূমিকা ছিল না। ওই জিনিসের একটা শিপমেন্ট লাগবে, কীভাবে তারা মাঠ প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে আনবে। তাদের অথরিটি স্টাবলিষ্ট করবে। সেটা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং।’

তারা বলছেন, ভোটকে সামনে রেখে তৈরি করতে হবে সমন্বিত নির্বাচনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। না হলে ব্যর্থ হতে পারে আগামী নির্বাচন।

জেসমিন টুলি বলেন, ‘আমি সবচেয়ে বেশি চিন্তিত যে, নির্বাচনকে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না করা যায় তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে তোলা খুব কঠিন।’

আব্দুল আলীম বলেন, ‘একটা সমন্বিত নির্বাচনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। এটা শুধু নির্বাচন কমিশন না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারা আছে সবার সঙ্গে মিলে একটা প্ল্যান করা দরকার। না হলে নির্বাচন চ্যালেঞ্জ এর মুখে পড়ে যাবে। এ কাজটা করতে না পারলে নির্বাচন ব্যর্থ হতে পারে।’

সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করেই যেন রোডম্যাপের দিকে আগায় নির্বাচন কমিশন, সেই পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

আব্দুল আলীম বলেন, ‘আরেকটা জিনিস হচ্ছে নির্বাচনে যে আচরণ বিধিমালা আছে, প্রতিটি রাজনৈতক দলকে সেটি পড়িয়ে স্বাক্ষর নেবে কমিশন যেন তারা এটাকে মেনে চলে। এভাবে নির্বাচন কমিশনকে কিছু স্ট্র্যাটেজি নিতে হবে যেন অস্থিরতাটা তারা কন্ট্রোল করতে পারে।’

জেসমিন টুলি বলেন, ‘যদি নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে এক জায়গায় বসিয়ে আচরণ বিধিমালার অ্যাগ্রিমেন্ট করিয়ে নিতে পারে যে হ্যাঁ, আমরা নির্বাচন করবো, অতীতে যেরকম হয়েছে এরকম হবে না। আপনাদের পক্ষ থেকে এই জিনিসগুলো মানতে হবে।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব স্থাপনাকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এরইমধ্যে সেসব স্থাপনা মেরামতের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনের ২৫ দিন আগে চূড়ান্ত করা হবে ভোটকেন্দ্রের তালিকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Gen Z Bangladesh Online - জেন জি বাংলাদেশ অনলাইন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ