| ০৭ জুন ২০২৫

মৎস্য প্রজনন: হালদায় অপেক্ষা এখন ডিম উৎসবের

রিপোর্টারের নামঃ ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট টাইম : 28-05-2025 ইং
  • 8195 বার পঠিত
মৎস্য প্রজনন: হালদায় অপেক্ষা এখন ডিম উৎসবের
ছবির ক্যাপশন: মৎস্য প্রজনন: হালদায় অপেক্ষা এখন ডিম উৎসবের

জ্যৈষ্ঠের দুপুরে চট্টগ্রামের হালদা নদীর রাউজান অংশে জাল ফেলে নৌকায় বসে আছেন তীরবর্তী বাসিন্দারা। তাদের উদ্দেশ্য মাছ ধরা নয়, মাছের ডিম সংগ্রহ করা। গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে দেশের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদায় নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। এর পর রাউজান ও হাটহাজারীর বিভিন্ন স্থানে ছুটে আসেন হালদাপাড়ের মানুষ। সংগ্রহকারীদের আশা, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল শুরু হলে পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ। এর পর হালদার দুই পাড়ে শুরু হবে ডিম সংগ্রহের উৎসব।

প্রাকৃতিক নিয়মে ডিম ছাড়তে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ কার্প জাতীয় মা মাছের আনাগোনা শুরু হয়। বছরের এই সময়ে (এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত) বজ্রসহ বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢল নামলে অমাবস্যা বা পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে জোয়ার ও ভাটার সময় নিষিক্ত ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মাছ। সেই নিষিক্ত ডিম বিশেষ ধরনের জাল দিয়ে সংগ্রহ করা হয়। তা থেকে পরে হ্যাচারিতে রেণু তৈরি হয়। হালদার হাটাহাজারী ও রাউজানসংলগ্ন প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে মেলে নিষিক্ত ডিম। এ অংশেই মা মাছের আনাগোনা বেশি।

প্রতি বছর হালদার দুই পাড়ে নিষিক্ত ডিম ধরার অপেক্ষায় থাকেন ৭০০ থেকে ৮০০ সংগ্রহকারী। গতকাল দুপুরে দেখা যায়, রাউজান অংশের বিভিন্ন স্থানে জাল ফেলে বসে আছেন সংগ্রহকারীরারা। দীর্ঘ সময় পর জাল তুললে অল্প কিছু ডিম মিলছে। দুপুর পর্যন্ত একেকজন ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত পেয়েছেন। সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, বজ্রবৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল শুরু হলে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে। আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুত আছি।

রাউজান উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসাইন বলেন, সোমবার রাতে বজ্রবৃষ্টি হলে হালদায় ডিম ছাড়ে মা মাছ। তবে পুরোদমে ছাড়েনি। বজ্রবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলসহ নদীর অন্যান্য পরিবেশ ঠিক থাকলে আগামী জোতে ডিম ছাড়তে পারে। আমরা হ্যাচারি ও মাটির কুয়ো তৈরিসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, চতুর্থ অমাবস্যার জো বা তিথিতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। এই অমাবস্যার জো শুরু হয়েছে ২৫ মে; চলবে ২৯ মে পর্যন্ত। মঙ্গলবার অমাবস্যা শেষ হচ্ছে। তাই রাতে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনুকূল পরিবেশ না পেলে এই জোতে পুরোদমে ডিম না ছাড়লেও পরবর্তী পূর্ণিমার জোতে (জুন মাসে) ছাড়বে।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদার পরিবেশ এখনও ডিম ছাড়ার উপযোগী নয়। কয়েক স্থানে স্বল্প পরিমাণ নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। নদীর পানির টারবিডিটি (ঘোলাটে) এখন ১০০ থেকে ১৫০। এটি ৬০০ থেকে ৭০০ থাকলে পুরোদমে ডিম ছাড়বে মা মাছ। 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Gen Z Bangladesh Online - জেন জি বাংলাদেশ অনলাইন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ