স্বীকৃতি দেয়া ছাড়াই আফগানিস্তানকে হাতে রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত ভারত, পাকিস্তান ও ইরান। ফলশ্রুতিতে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি পার করছেন ব্যস্ত সময়। ঐতিহাসিকভাবে তিন দেশের সঙ্গেই খারাপ সম্পর্ক থাকলেও সাম্প্রতিক আঞ্চলিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে কাবুল। যেখানে নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রাধান্য পাচ্ছে বাণিজ্য ও অর্থনীতি।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আতিথেয়তা দিয়েছেন আমির খান মুত্তাকি। ফোনালাপ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সফর করেছেন ইরান ও চীন। অথচ ঐতিহাসিকভাবে কোনো দেশের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্ক ভালো নয়।
আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টার পেছনে প্রতিটি দেশের রয়েছে নিজস্ব স্বার্থ। প্রথম দফায় ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তালেবানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেনি ভারত। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ে আফগানিস্তানের। এসময় তালেবানের মদদে ভারতীয় ভূখণ্ডে হামলার অভিযোগও উঠে কয়েকবার।
যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের শাসনামলে দেশটিতে ৩০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করেছে নয়া দিল্লি।
২০২১ সালে তালেবানের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রত্যাবর্তনের পর নয়া দিল্লির নিরাপত্তা ও বিনিয়োগ রক্ষার স্বার্থে বাড়ানো হয়েছে কূটনৈতিক যোগাযোগ।
দ্যা হিন্দু’র পররাষ্ট্রবিষয়ক সম্পাদক সুহাসিনী হায়দার বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক ছিল। তাই এসময় দেশটিতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ ও বিভিন্ন প্রকল্প শুরু করে ভারত। মোদি সরকার বর্তমানে সেটিই রক্ষা করতে চাইছে।’
১৯৯৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তালেবানের অন্যতম সহায়তাকারী রাষ্ট্র ছিলো পাকিস্তান। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা দখলের পর কাবুল শাসকদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে ইসলামাবাদের।
টিটিপি ও বিএলএ’র মতো সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর পেছনে তালেবানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গেলো বছর দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি হামলা।
তবে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাদের পাকিস্তানে হামলার শঙ্কায় কাবুলের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে বাধ্য হয়েছে ইসলামাবাদ।
বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক বৈঠকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নিজ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার বন্ধে সম্মত হয় চীন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান।
তবে এই সম্পর্ককে কৌশলগত বলছেন বিশ্লেষকরা। কারণ আফগান শরণার্থী বিতাড়িতের প্রসঙ্গে এখনো অনড় অবস্থায় শেহবাজ শরীফ প্রশাসন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ‘আফগানিস্তান ও চীন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে। পাশাপাশি টিটিপি, বিএলএ কিংবা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে আমরা তিন দেশ নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবো না।’
১৯৯৮ সালে আফগানিস্তানে এক ইরানি কূটনীতিককে হত্যার পর কাবুল-তেহরান সম্পর্কে চিড় ধরে। তবে নাইন ইলেভেনের পর মার্কিন শাসন শুরু হলে আফগানিস্তানকে সহায়তা প্রদান শুরু করে ইরান। মাঝে নানান চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়েছে দুই পক্ষ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চপর্যায়ের কূটনীতি শুরুর ক্ষেত্রে দুই দেশের নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রাধান্য পাচ্ছে অর্থনীতি, বাণিজ্য ও অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ইস্যু।
ফজর | ০৪:৫৪-০৬:০৮ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১২:০৯-০৪:২৫ মিনিট দুপুর |
আছর | ০৪:২৬-০৬:০৬ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ০৬:১০-০৭:২১ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:২২-০৮:৪৯ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১.৩০ মিনিট দুপুর |