কারও ৭০ বছরের, কারো বা ১১০ বছরের অপেক্ষার অবসান। আবার হ্যারি কেইন বা সন হিউং মিনদের মতো তারকাদের ক্যারিয়ারের আক্ষেপ ঘুচানো। সবই হয়েছে ২০২৪-২৫ মৌসুমে। অঘটন নাকি ফুটবলের আশীর্বাদের মৌসুম?

আজনম ভালোবেসে গেছেন। বিনিময়ে কেবল চোখের পানিই ঝরাতে হয়েছে। প্রিয় ক্লাবটাকে কখনও ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে দেখার সাধ বুঝি আর পূরণ হলো না! না, হয়েছে। এ বছর ট্রফি জিতেছে তারা, যাদের কেবিনেটটা ছিল রিক্ততায় ভরা। উৎসবের মিছিলে হেঁটেছেন সেসব পাগলাটে সমর্থক, এ জন্মে যাদের কখনও সে সুযোগ হয়নি। নি:স্বার্থে যারা ভালোবেসে গেছেন ফুটবল আর প্রিয় ক্লাব, মৌসুমটা তাদেরই।

ইউরোপিয়ান ফুটবলে রূপকথার মৌসুমে কে কোথায় কীভাবে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছে শুনুন। জন্মের ১১৯ বছর পর প্রথম মেজর কোনো শিরোপা জিতলো ক্রিস্টাল প্যালেস। ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে এফএ কাপ জিতে নিয়েছে শতবর্ষী দলটি। বছরের শুরুতে ইংলিশ ফুটবলে অঘটনের শুরুটা নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের হাত ধরে। লিগ কাপের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল লিভারপুলকে হারিয়ে ৫৬ বছরের ট্রফি খরা কাটায় তারা। পাঁচ দশকের দুঃখ ভুলেছে ইতালিয়ান ক্লাব বোলোনিয়াও। ১৯৭৪ সালের পর জিতে নিয়েছে মেজর ট্রফি, ফিওরেন্তিনাকে হারিয়ে উঁচিয়ে ধরেছে কোপা ইতালিয়া।

দুঃখ ভোলানো মৌসুমে আক্ষেপ মিটেছে হ্যারি কেইনের। ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার ট্রফি কেবিনেট শূন্য বলে এতদিন যারা টিপ্পনী কেটেছেন, তাদের মুখটা অন্তত বন্ধ করতে পেরেছেন তিনি। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে উজ্জ্বল ক্যারিয়ারে যোগ হলো বুন্দেসলিগার শিরোপা।

হ্যারি কেইনের প্রাক্তন ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পারও দীর্ঘ ১৭ বছরের ট্রফি খরা কাটিয়েছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে হয়েছে ইউরোপা চ্যাম্পিয়ন। মিষ্টি হাসির সন হিউং মিন এবার সত্যিকারার্থেই হাসতে পারবেন। এই কোরিয়ানের ক্যারিয়ারেরও যে প্রথম কোন মেজর ট্রফি এটি!

ফুটবলের পয়া মৌসুমে চেরি অন টপ হতে পারে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়। ফ্রেঞ্চ দলটির ইতিহাসে কখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের রেকর্ড নেই। আরেক ফাইনালিস্ট ইন্টার মিলানও দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ইউরোপসেরা হওয়ার অপেক্ষায়। যারাই জিতুক, অনিশ্চিত সৌন্দর্যের মৌসুম আরো রঙিন হবে।

এতসব চমকে ভরা মৌসুম ফুটবলকে আরও মহিমান্বিত করে তোলে। আরও ভালোবাসতে শেখায়।