| ০৭ জুন ২০২৫

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি: নির্বাচন কমিশনের সামনে এনসিপির বিক্ষোভ আজ

রিপোর্টারের নামঃ ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট টাইম : 21-05-2025 ইং
  • 16191 বার পঠিত
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি: নির্বাচন কমিশনের সামনে এনসিপির বিক্ষোভ আজ
ছবির ক্যাপশন: স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি: নির্বাচন কমিশনের সামনে এনসিপির বিক্ষোভ আজ

স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়ায় বিগত অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতে গিয়ে সংকট তৈরি করেছেন বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নেতারা বলছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে এই সংকট নিরসন করা সম্ভব। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত, তারা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। তাই ইসি পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে আজ বুধবার বেলা ১১টায় আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলামটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির কথা জানান এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি, যে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, অনতিবিলম্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া উচিত। আর এই নির্বাচন কমিশনের ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারছি না। কারণ, তারা পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। তারা নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবনা আমলে নেয়নি। তাদের গঠন প্রক্রিয়ায় ত্রুটি রয়েছে। তাই আমরা ইসি পুনর্গঠনের কথা বলছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিগত সব নির্বাচনকে অবৈধ বলেছি। ওই আমলে আমরা ফ্যাসিবাদী সব দলের নির্বাচনগুলো প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন সেই নির্বাচনের আমি বৈধ প্রার্থী বলতে পারি না, এটা দ্বিচারিতা। সেই জায়গা থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ইসি পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেতে হবে।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু নির্বাচনকে পরিকল্পিতভাবে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা নির্বাচনের বিরোধিতা করিনি, আমরা বলেছি, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের জন্য আমরা বিচার এবং সংস্কারের কথা বলেছি। আমরা একই সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলছি।

তিনি বলেন, যদি বিএনপির বা অন্য দলের জাতীয় নির্বাচন পেছানোর শঙ্কা থাকে। আমরা তো বলিনি, জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় নির্বাচন, গণপরিষদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়ে তার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিক, আমাদের আপত্তি নেই।

এর মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের জন্য এই প্রশাসন কতটুকু সক্ষম তা প্রমাণ হবে। অবশ্যই সেই নির্বাচনের জন্য ইসি পুনর্গঠন করা হবে।

লিখিত বক্তব্যে আখতার হোসেন বলেন, ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা দায়ী বলে আমরা মনে করি। ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীনভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, যার ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে। এমনকি রায়ের পর উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

তিনি বলেন, এর আগেও আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য প্রদান করেছে, যার সঙ্গে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের সাযুজ্য রয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার আগে সংশ্লিষ্ট আইনের অধীন ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়, ফলে পুরো মামলাটি অকার্যকর হয়ে পড়ে।

সদস্য সচিব বলেন, রায় প্রকাশের পর গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইলেও মতামত প্রদানের আগে রাতের আঁধারে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক ভূমিকা স্পষ্টতই পক্ষপাতমূলক। ফ্যাসিবাদী সময়ের আইনে গঠিত নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের পলাতক ও মানবতাবিরোধী ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেছে। ফলে এই কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, ইশরাক হোসেনের মামলাকে নজির হিসেবে নিয়ে সারাদেশে অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতের শরণাপন্ন হওয়ায় এক জটিল ও সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ সংকট নিরসনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন একমাত্র সমাধান। কিন্তু ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত পক্ষপাতদুষ্ট কমিশন এই নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয়। আমরা অনতিবিলম্বে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানাই। এ দাবিতে বুধবার বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Gen Z Bangladesh Online - জেন জি বাংলাদেশ অনলাইন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ