| ০৮ জুন ২০২৫

জয়শঙ্করের বিস্ফোরক তথ্যে আরো চাপে মোদি

রিপোর্টারের নামঃ ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট টাইম : 21-05-2025 ইং
  • 17643 বার পঠিত
জয়শঙ্করের বিস্ফোরক তথ্যে আরো চাপে মোদি
ছবির ক্যাপশন: জয়শঙ্করের বিস্ফোরক তথ্যে আরো চাপে মোদি

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে সামরিক দিক দিয়ে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির পর এবার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চাপের মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদি। সময় যত যাচ্ছে, এই যুদ্ধের অজানা অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে।

এর মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনায় জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানকে জানিয়েই তারা দেশটিতে হামলা চালিয়েছিলেন। এরপর সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। যুদ্ধ উন্মাদনায় থাকা ভারতীয়রা রাফালে যুদ্ধবিমান হারানোর খবরের পর থেকে ছিলেন হতাশ। জয়শঙ্করের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভ আরো বাড়তে থাকে।

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে এই যুদ্ধ শুরু করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। গত ১৭ মে বিরোধী দল নেতা রাহুল গান্ধী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের একটি ছোট্ট ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। ১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে সংবাদমাধ্যমের কয়েকজন প্রতিনিধির সামনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি বক্তব্য পাওয়া যায়। সেখানে মি. জয়শঙ্করকে বলতে শোনা যায়, ‘অভিযানের শুরুতেই আমরা পাকিস্তানকে একটা বার্তা পাঠিয়েছিলাম, আমরা জঙ্গি অবকাঠামোগুলোয় আঘাত হানব, কিন্তু সামরিক স্থাপনায় কোনো আক্রমণ করব না।’

‘সুতরাং তাদের মিলিটারির সামনে এই অপশনটা ছিল তারা এটা থেকে সরে দাঁড়াবে এবং অভিযানে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু তারা সেই উচিত পরামর্শে কান দেয়নি।’

রাহুল গান্ধী এমন একসময় এই ভিডিওটি সামনে আনেন, যার এক দিন আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দাবি করেন, পাঁচটি নয়, ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে। পরের যুদ্ধবিমানটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি মিরেজ ২০০০। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের এই ভিডিও শেয়ার করে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আমাদের আক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই তা পাকিস্তানকে জানানো একটা অপরাধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, ভারত সরকার এই অপরাধের কাজটি করেছে।এরপরই তিনি দুটি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘কে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিল? এবং এর পরিণতিতে আমাদের বিমানবাহিনী কটি যুদ্ধবিমান খুইয়েছে?’

ভারতের দিক থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কতটা যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে, তা জানানো হয়নি। ভারতের বিমানবাহিনীর এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুললে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ক্ষয়ক্ষতি যেকোনো যুদ্ধ পরিস্থিতির অংশ। অবশ্য সংঘর্ষের প্রথম দিনেই পাকিস্তান দাবি করেছিল তারা অত্যাধুনিক রাফালেসহ ভারতের পাঁচটি ফাইটার জেট ভূপাতিত করেছে। সিএনএন, বিবিসিসহ পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ভারতের অন্তত তিনটি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা নিশ্চিত করেছে।

রাহুল গান্ধী যখন যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির জন্য মোদি সরকারের দিকে আঙুল তুলছেন তখন মন্ত্রীকে বাঁচাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা শুরুতেই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলাম, যেটা স্পষ্টতই অপারেশন সিঁদুর শুরু হওয়ার পর প্রাথমিকপর্যায়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাহুল গান্ধীর দিকে উল্টো আঙুল তুলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযান শুরুর আগে ঘটেছে বলে মিথ্যা উপস্থাপন করা হচ্ছে। বিকৃতভাবে এই তথ্য পেশ করার তীব্র নিন্দা জানাই।’

তবে অনেক সামরিক বিশ্লেষক মনে করেন, পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত আগে জানাক বা না জানাক, এই হামলার ব্যাপারে পাকিস্তান বেশ ভালোভাবে প্রস্তুত ছিল। তা বোঝা গেছে বেসামরিক এলাকায় ভারতের হামলা ও পাকিস্তানের প্রত্যাঘাতের পর। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ভারতের পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সামনে স্বীকার করেছেন, অপারেশনের শুরুতে পাকিস্তানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল তারা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোয় লক্ষ্যবস্তু করবে, সামরিক স্থাপনা নয়। তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

পাকিস্তানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ বন্ধের কথা জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। তার এই ঘোষণার পর ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে আক্রমণ শুরু করে। তাকে একজন দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করে ভারত ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়। বিক্রম মিশ্রির জন্ম সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছ।

সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানায়, ভারতের অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া সৌদি আরব, তুরস্ক ও আরব আমিরাতকে যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপারে অনুরোধ করে ভারত। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম পাক-ভারত যুদ্ধ বন্ধের কথা জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
নামাজের সময়সূচী
জাতীয় সঙ্গীত
©সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Gen Z Bangladesh Online - জেন জি বাংলাদেশ অনলাইন | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ