ডেস্ক নিউজ:
অত্যাধিক প্রক্রিয়াজাত খাবারের (আল্টা প্রসেস ফুড ইউপিএফ) কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অকাল মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একাধিক গবেষণায় উদ্বেগজনক এ তথ্য উঠে এসেছে। আমেরিকান জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ মেডিসিনের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, উন্নত দেশগুলোয় প্রতি সাতটি অকালমৃত্যুর মধ্যে একটির জন্য দায়ী এই অতি প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্য। খবর গার্ডিয়ান।
অতি প্রক্রিয়াজাত এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে রুটি, কেক, প্রস্তুত খাবার, মিষ্টি ও স্ন্যাক্স। এই খাবারগুলো উচ্চমাত্রার চিনি, লবণ, চর্বি ও অন্যান্য ক্ষতিকারক উপাদানযুক্ত বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। গবেষণা দলের প্রধান লেখক এদুয়ার্দো আগুস্তো ফার্নান্দেস নিলসন বলেছেন, ‘ইউপিএফ শুধু উচ্চ মাত্রার চিনি, লবণ ও চর্বির কারণে ক্ষতিকারক নয়, এতে ব্যবহৃত কৃত্রিম উপাদান যেমন সুইটেনার, ফ্লেভারিং, ও বিভিন্ন এডিটিভও শরীরের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে।’
গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের খাবার গ্রহণের হার ১০ শতাংশ বাড়ালে ৭৫ বছরের আগেই মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে ৩ শতাংশ। খাবারগুলো শুধু পুষ্টিগতমানের কারণেই নয় বরং তাদের প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত কৃত্রিম উপাদান ও রঞ্জকের কারণে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ইউপিএফের কারণে অকাল মৃত্যুর হার বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অন্যান্য উচ্চ-আয়ের দেশগুলোয় এই হার সবচেয়ে বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ১ লাখ ২৪ হাজার ১০৭ জন ও ইংল্যান্ডে ১৭ হাজার ৭৮১ জন মানুষের অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী এই ধরণের খাদ্য গ্রহণ। এমনকি ব্রাজিল, কলম্বিয়া, চিলি ও মেক্সিকো সহ অনেক উন্নয়নশীল দেশেও এই প্রক্রিয়াজাত খাবারের ক্ষতিকারক প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে ২০১৮-২০১৯ সালের জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি জরিপে দেখা গেছে যে, ইংল্যান্ডের জনগণের ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ ক্যালোরি আসে ইউপিএফ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে এই পরিমাণ আরো বেশি, ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এই খাদ্য অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে অকাল মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়। শুধু উন্নত দেশে এটি দ্রুত নিম্ন ও মধ্য-আয়ের দেশগুলোতেও এই প্রবণতা বাড়ছে। ব্রাজিল, কলম্বিয়া, চিলি এবং মেক্সিকোতে ইউপিএফ জনিত মৃত্যুর হার যথাক্রমে ৪, ৫ ও ৬ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ (ডব্লিউএইচও) অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো অতি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে অনেক বছর ধরেই সতর্ক করে আসছে। যদিও বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই সমস্যা মোকাবেলা না করলে, আগামীতে স্বাস্থ্য খাতে বিশাল ক্ষতির সঙ্গে মৃত্যুহার আরো বাড়তে থাকবে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। একে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এজন্য খাদ্য বিপণনের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ, স্কুল ও কর্মস্থলে অতি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের বিক্রির উপর বিধিনিষেধ ও এই ধরণের পণ্যের ওপর কর আরোপ করার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা।
ফজর | ০৪:৫৪-০৬:০৮ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১২:০৯-০৪:২৫ মিনিট দুপুর |
আছর | ০৪:২৬-০৬:০৬ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ০৬:১০-০৭:২১ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:২২-০৮:৪৯ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১.৩০ মিনিট দুপুর |