তিন বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে আফ্রিকার সুদানে। এই আবহে সুদানের সেনাপ্রধান এবং কার্যত রাষ্ট্রপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান তার সার্বভৌম পরিষদে পরিবর্তনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা কামিল ইদ্রিসকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। যুদ্ধের ফলে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী নেতারা তাদের ক্ষমতা সুসংহত করার চেষ্টা করছেন।
সোমবার সুদানের ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সার্বভৌমত্ব পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সার্বভৌমত্ব পরিষদের চেয়ারম্যান কামিল এল-তাইয়েব ইদ্রিস আবদেল হাফিজকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে একটি সাংবিধানিক ডিক্রি জারি করেছেন।
পেশাগত কূটনীতিক ইদ্রিস জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনে কয়েক দশক ধরে কাজ করেছেন এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এর মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন এবং জাতিসংঘে দেশটির স্থায়ী মিশনের দায়িত্বেও ছিলেন। আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ইদ্রিস। তিনি ২০১০ সালে সুদানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দীর্ঘকালীন সামরিক শাসক ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যিনি পরে ২০১৯ সালের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন।
নতুন প্রধানমন্ত্রী ইদ্রিস প্রবীণ কূটনীতিক দাফাল্লাহ আল-হাজ আলীর স্থলাভিষিক্ত হবেন, যাকে আল-বুরহান এক মাসেরও কম সময় আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। সোমবার আল-বুরহান কাউন্সিলে দুইজন নারীকেও নিযুক্ত করেছেন। সামরিক নেতা সালমা আবদেল জব্বার আলমুবারাককে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন এবং নোয়ারা আবু মোহাম্মদ মোহাম্মদ তাহিরকে গভর্নিং বডিতে মনোনীত করেছেন।
আল-বুরহানের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী এবং মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধে লিপ্ত, কারণ দুই জেনারেল তাদের বাহিনীকে একীভূত করার পরিকল্পনায় একমত হতে ব্যর্থ হয়েছেন। আল-বুরহান যখন সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে সরকার গঠনের চেষ্টা করছিলেন, তখন কেনিয়ার নাইরোবিতে মিত্রদের সঙ্গে একটি সনদ স্বাক্ষরের পরপরই গত মাসে দাগালো একটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসন গঠনের ঘোষণাও দেন।
সুদানের মধ্য-পূর্ব এবং উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকা দখলকারী সেনাবাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজধানী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণসহ কিছু অঞ্চলে নিজেদের সামরিক বিজয় দাবি করেছে। আরএসএফ, যারা দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ অংশ এবং দক্ষিণের কিছু এলাকা নিজেদের মিত্র মিলিশিয়াদের সঙ্গে দখল করে রেখেছে, তারা এই মাসে বারবার পোর্ট সুদানে আক্রমণ চালিয়েছে। সুদানে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট অব্যাহত রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং কিছু দেশ সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে দারফুরের এল-ফাশারের মতো শহরগুলো, যা মানবিক সহায়তা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে চলেছে।
সূত্র: আলজাজিরা
ফজর | ০৪:৫৪-০৬:০৮ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১২:০৯-০৪:২৫ মিনিট দুপুর |
আছর | ০৪:২৬-০৬:০৬ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ০৬:১০-০৭:২১ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:২২-০৮:৪৯ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১.৩০ মিনিট দুপুর |