বিশেষ প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি।।
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে বৃটেন। এ কথা জানিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। ইরানের হুমকির পরও তিনি ইসরাইলকে প্রতিরক্ষায় সহায়তা করার সম্ভাবনা নাকচ করেননি। তবে এর আগে তেহরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তারা বলেছে, ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিলে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও ফ্রান্সের আঞ্চলিক ঘাঁটিগুলো টার্গেট করা হতে পারে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান। এতে আরও বলা হয়, জি৭ সম্মেলনে যাওয়ার পথে বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্টারমার উত্তেজনা কমানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, ইসরাইলের ইরান আক্রমণের পরপরই তিনি একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে কথা বলেন। এর মধ্যে আছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রমুখ। তিনি বলেন, বৃটেনের স্বার্থে যা সঠিক, আমি সেই সিদ্ধান্তই নেব। ইরানের হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এই অঞ্চলে সামরিক সম্পদ, বিশেষত যুদ্ধবিমান মোতায়েন করছি, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেয়া যায়।
ওদিকে ১০, ডাউনিং স্ট্রিট জানায় আগে থেকেই মোতায়েন জেট বিমানের সঙ্গে আরও ‘ফাস্ট জেট’ এবং রিফুয়েলিং এয়ারক্রাফট যুক্ত করা হচ্ছে। উত্তেজনা অব্যাহত থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে জরুরি সহায়তা দিতে পারবে এসব সরঞ্জাম। প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে শুক্রবার সকালে ইসরাইল যখন ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও শীর্ষ সামরিক নেতাদের ওপর হামলা চালায়। বৃটেন কি ইরানের পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ইসরাইলকে সহায়তা করবে? এ প্রশ্নের জবাবে স্টারমার সরাসরি উত্তর দেননি। তিনি বলেন, এসব হচ্ছে সামরিক পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। পরিস্থিতি এখনো চলমান ও জটিল। তাই বিশদে যেতে চাই না। তবে আমরা এরই মধ্যে ওই অঞ্চলজুড়ে সমর্থনের জন্য সম্পদ জমা করছি। এর মধ্যে জেটও আছে। এই কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
সূত্রমতে, এ পর্যন্ত ইসরাইলের জন্য কোনো সরাসরি সামরিক অভিযানে অংশ নেয়নি বৃটেন বা ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসেও সহায়তা করেনি। লন্ডন ত্যাগের আগে স্টারমার সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলেন। ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, উভয় নেতা উত্তেজনা প্রশমনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। বিমানে স্টারমার বলেন, তিনি আরও কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎসে, নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ধারণা করছি জি৭ সম্মেলনে পৌঁছানোর পর এ বিষয় নিয়ে আরও জোরালো মতবিনিময় হবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে উদ্বিগ্ন। একইসঙ্গে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকেও স্বীকার করি। তবে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, উত্তেজনা প্রশমিত হওয়া জরুরি। এই অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার বিশাল ঝুঁকি রয়েছে। এর প্রভাব আমরা ইতিমধ্যেই বিশ্ব অর্থনীতি ও তেলের দামে দেখতে পাচ্ছি।
স্টারমার আরও বলেন, শনিবার বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এবং ডেভিড ল্যামি নিয়মিত আমাদের মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমাদের বার্তা একটাই- উত্তেজনা কমাও এবং আমাদের সব পদক্ষেপই এই লক্ষ্যে। তবে ডাউনিং স্ট্রিট নিশ্চিত করেনি, ইসরাইল হামলা চালানোর আগে বৃটেনকে সতর্ক করেছিল কি না। এই প্রশ্নে স্টারমার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও জানান, কিছু পূর্ব-ধারণা তাদের ছিল। তিনি বলেন, আমরা ঠিক কী তথ্য পেয়েছিলাম তা বলব না। তবে মিত্রদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় তথ্য বিনিময় রয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে।
উল্লেখ্য, স্টারমার প্রথমে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন অটোয়ায়। এরপর জি৭ সম্মেলনস্থল আলবার্টার কানানাস্কিসে যাবেন।