বিশেষ প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি।।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) ওই হামলার দায় স্বীকার করে। তবে ভারতের দাবি, এই গোষ্ঠী পাকিস্তান–সমর্থিত। পাকিস্তান এ অভিযোগ নাকচ করে দিলেও দেশটিতে হামলা চালায় ভারত।

প্রথমে দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়। সেই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেয় ৭ মে। সেদিন সকালে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চারটি স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর প্রকাশ্যে আসে। মূলত গভীর রাতে হামলা চালায় ভারত।

চার দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই লড়াইয়ে কেউ পুরোপুরি জয়ী হয়েছে কি না, তা বলা কঠিন। তবে সংঘাতে দুই পক্ষই নিজেদের ‘বিজয়’ দাবি করেছে।

৬ মে রাতে ভারতের হামলা ও পরবর্তী দৃশ্যপট নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। শুক্রবার ( ১৬ মে) ভারতের হামলায় নিহতদের স্মরণে পাকিস্তানে ইওম-ই-তাশাকুর পালনের এক অনুষ্ঠানে পাক প্রধানমন্ত্রী জানান, সেদিন রাত আড়াইটার দিকে সেনাপ্রধান তাকে ফোন কলে বলেছিলেন যে ভারত পাকিস্তানের উপর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এরপর সেনাপ্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আমাদের শত্রুদের উপর এমন জোরে আঘাত করার অনুমতি দিন যাতে তারা কখনও তা ভুলে না যায়’।

শেহবাজ আরও বলেন যে, পাকিস্তানের প্রতিশোধ নেয়ার পর, সেই রাতেই সেনাপ্রধান তাকে বলেছিলেন: “আমরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছি এবং এখন আমাদের যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আপনি কী ভাবছেন?”

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন যে তিনি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন: “এমন আঘাতের চেয়ে বড় আর কী হতে পারে যা শত্রুদের মাথা ঘুরিয়ে দেয় এবং যুদ্ধবিরতির জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে? এগিয়ে যান এবং প্রস্তাবটি গ্রহণ করুন।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের তিনি জানান, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ব্যবহৃত প্রযুক্তি শত্রুদের হতবাক করেছে এবং মিত্রদের আস্থাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। শেহবাজ বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক উন্নয়ন যা সৃষ্টিকর্তা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটিয়েছেন।” এ সময় সামরিক বাহিনীর বীরত্বের কথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাপান পর্যন্ত আলোচনা করা হচ্ছে বলেও জানান পাক প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন কোনও বৃহৎ শক্তি পাকিস্তানের পথ আটকাতে পারবে না, পেশোয়ার থেকে করাচি পর্যন্ত সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ, সেনাবাহিনীর পেছনে দাঁড়িয়ে সমর্থন করছে। অনুষ্ঠান থেকে যুদ্ধবিরতি অর্জনে মিত্র দেশগুলোর প্রচেষ্টার জন্য তিনি তার কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সূত্র : ডন