বিশেষ প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি।।
ডেস্ক নিউজ:
বিদেশে অর্থপাচারকারীদের ধরতে এবং তাদের সম্পদ জব্দে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে— এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একথা জানান তিনি। এসময় দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রাণ ফেরানোরও আশ্বাস দেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। দেশের ব্যাংকিং খাতের অগ্রগতির লক্ষ্যে আমিরাতের কয়েকটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এরইমধ্যে বৈঠক করেছেন তিনি।
বৃস্পতিবার (১৫ মে) রাতে প্রবাসীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন গভর্নর। এসময় বিদেশে থাকা দেশিয় ব্যাংকের ঋণ খেলাপীদের শনাক্ত করার তাগিদ দেন কমিউনিটি নেতারা।
একইসাথে স্বল্প আয়ের রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা চালুরও দাবি জানান।
দুবাইয়ে জনতা ব্যাংক ও ইসলামি ব্যাংকের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায়, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন গভর্নর।
তিনি জানান, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোতে সরকারি হস্তক্ষেপের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সবল করতে দুর্বল সরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সরকারিকরণ করা হতে পারে; প্রয়োজনে সরকার থেকে নতুন করে মূলধন দিয়ে পুনর্গঠন করা হতে পারে ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আগের যে মালিকানা আছে সেগুলো থাকবে না। আমারা সেটাতে হস্তক্ষেপ করে প্রয়োজনে সরকার থেকে টাকা দিয়ে রিক্যাপিটালাইজ করে আমরা সেই ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করবো। কিন্তু আমাদের কমিটমেন্ট হচ্ছে কোনো ডিপোজিটার কোনো টাকা হারাবে না। আস্থা রেখে সরকারিকরণের মাধ্যমে আমরা এই ব্যাংকগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করবো। বেসরকারি বা সরকারি যে ব্যাংকই দুর্বল হোক না কেনো আমরা হস্তক্ষেপ করবো।’
বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার প্রসঙ্গেও কথা বলেন ড. আহসান এইচ মনসুর। জানান, অর্থপাচারে জড়িতদের ধরতে প্রয়োজন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা। অর্থপাচারকারীদের সম্পদ জব্দের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান গভর্নর।
সভায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণ করায় আমিরাত প্রবাসীদের সাধুবাদ জানান আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। সাধারণ কর্মীদের বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে ফি কমানোর বিষয়ে জোর দেন কনসাল জেনারেল।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই এত কষ্ট করে পয়সা অর্জন করতে হয়না, যেটি আমরা এখানে দেখি। এরপরও এখানে কয়েক লাখ লোক থাকে। আমাদের এখান থেকে রেমিট্যান্সও বেশি যায়। এজন্য আমাদের এই কমিউনিটিকে আমরা সবসময় সাধুবাদ দিয়ে থাকি।’
সভায় ব্যাংকিং খাতের সুযোগ-সুবিধা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন দুটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশের জনতা ব্যাংকের নতুন ১৩টি বুথ স্থাপনের ঘোষণা দেন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ফজলুর রহমান।